আপনার শিশুর জন্য পর্যাপ্ত বুকের দুধ তৈরি হচ্ছে না? চিন্তায় আছেন? তবে চিন্তা করবেন না। কারণ এই সমস্যা আপনার শুধু একার নয়। আরো অনেকেরই হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নতুন মায়েদের প্রায় ৭৫ শতাংশ জন্মের পরেই শিশুদের বুকের দুধ পান করানো শুরু করে। কিন্তু বেশিরভাগ মা প্রথম কয়েক মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। এর কারণের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে বুকের দুধ তৈরি না হওয়া নিয়ে মায়ের চিন্তা। তাই দুধ উৎপাদনও কমে যায়। যাইহোক যদি বুকের দুধের উৎপাদন বাড়াতে চান তাহলে কিছু উপায় আছে, সেগুলো পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
১. শিশুকে ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে এবং খাওয়ানো কখন বন্ধ করতে হবে সেটা আপনার শিশুর ওপর ছেড়ে দিতে হবে। শিশু যখন বুকের দুধ পান করে তখন আপনার শরীর থেকে হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন দুধ উৎপাদনের ওপর প্রভাব ফেলে। যেটা ভালো। এটাকে বলা হয় ‘লেট-ডাউন’ রিফ্লেক্স। লেট-ডাউন রিফ্লেক্স হলো, স্তনের পেশীগুলো সংকুচিত হয় এবং নালীগুলোর মধ্য দিয়ে দুধ সরে যায়। এটি ঘটে যখন আপনার শিশু বুকের দুধ পান করতে শুরু করে। তাই যত বেশি বুকের দুধ খাওয়াবেন তত বেশি বুকের দুধ তৈরি হবে। শিশুকে দিনে ৮ থেকে ১২ বার বুকের দুধ পান করান।
২. দুটি স্তন থেকেই সমানভাবে শিশুকে দুধ পান করাতে হবে। প্রথম স্তন থেকে শিশুকে দুধ পান করান এবং সেই পর্যন্তই করান যতক্ষণ না পর্যন্তু শিশু পান করা বন্ধ করে দেয়। এরপর দ্বীতিয় স্তনে দুধ পান করান। উভয় স্তন থেকে বুকের দুধ খাওয়ানোর ফলে দুধ উৎপাদন বাড়ে। একই সঙ্গে উভয় স্তন থেকে দুধ পাম্প করলে, দুধের উৎপাদন বাড়ে এবং দুধে চর্বির পরিমাণও বেশি হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
৩. শিশুকে একবার দুধ পান করিয়ে পাম্প মেশিন বা যন্ত্র দিয়ে পাম্প করে নিন। অর্থাৎ দুই বার দুধ পান করানোর মাঝে একবার পাম্প করে নিন। এতে দুধ বেশি পরিমাণে তৈরি হয়।
পাম্প করার চেষ্টা করুন যখন:
** খাওয়ানোর পর বুকে দুধ অবশিষ্ট আছে।
** শিশু একবার দুধ খেতে পারেনি তাই জমে গেছে।
** শিশু ফর্মুলা খাচ্ছে তুবও পাম্প করে খায়ানোর চেষ্টা করুন।
৪. বুকের দুধ বা ব্রেস্ট মিল্কের উৎপাদন বাড়াতে খাবারের তালিকায় টাটকা শাক-সবজি, পিঁয়াজ, মুরগি, ডিম, দুধ, রসুন, মিট স্যুপ রাখুন। এছাড়াও মরশুমি ফল ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন স্যালমন, ফ্ল্যাক্সবীজ স্তন্যদানকারী নারীদের জন্য ভালো। এছাড়াও, বুকের দুধের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য মেথি, ওটমিল, মৌরি বেশ কার্যকরী।
৫.মায়ের দুধের প্রায় ৯০ শতাংশই পানি। তাই শিশুকে দুধ পান করার সময় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা খুব জরুরি। এই সময় প্রতিদিন ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করুন। এছাড়াও, অন্যান্য তরল খাবার যেমন, দুধ, জুস, সুপ পান করতে পারেন। শিশুকে দুধ পান করানোর আগে এক গ্লাস পানি পান করুন।
সূত্র : হেল্থ লাইন এবং হিন্দুস্তান টাইমস, দৈনিক কালের কন্ঠ